গাজায় ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসন ও গণহত্যার প্রতিবাদে ভারতজুড়ে নাগরিক সংগঠন ও মানবাধিকার কর্মীরা সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে খোলা চিঠি পাঠিয়ে জোরালো পদক্ষেপ দাবি করেছে। তাদের আহ্বান—ভারত যেন নৈতিক অবস্থান নিয়ে যুদ্ধবিরতির পক্ষে প্রকাশ্যে কথা বলে।
ভারত প্যালেস্টাইন সংহতি ফোরাম (IPSF) ৩ আগস্ট ভারতের লোকসভা ও রাজ্যসভার প্রতিটি সংসদ সদস্যকে একটি বিশদ মেমোরেন্ডাম পাঠিয়েছে, যেখানে গাজায় অবিলম্বে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও ইসরায়েলি আগ্রাসনের নিন্দা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
IPSF জানিয়েছে, গাজা ও পশ্চিম তীরে চলমান হত্যাযজ্ঞ, খাদ্য অবরোধ ও ইচ্ছাকৃত দুর্ভিক্ষ এক আন্তর্জাতিক মানবিক সংকট। ইসরায়েল এখনো মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা দিচ্ছে।
চিঠিতে ভারতের জাতিসংঘে প্রতিনিধি হারিশ পার্বতানেনির সাম্প্রতিক বক্তব্যেরও সমালোচনা করা হয়, যেখানে তিনি যুদ্ধবিরতির কথা বললেও ইসরায়েলের নাম উল্লেখ করেননি। সংস্থাটি একে "দ্বিচারিতা ও ভণ্ডামি" বলে অভিহিত করেছে।
IPSF বলছে, ভারতের ঐতিহাসিক কূটনৈতিক ঐতিহ্য, জাতিসংঘের প্রস্তাব এবং সংবিধানের ৫১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী দেশটির উচিত ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধের বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান নেওয়া।
এই মেমোরেন্ডামে স্বাক্ষর দিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট নাগরিক ও আন্দোলনকর্মীরা, যেমন:
মেধা পাটকর, তুষার গান্ধী, প্রশান্ত ভূষণ, ললিতা রামদাস, আনন্দ পটওয়ার্ধন, জাস্টিস কোলসে পাটিল (অব.), সাবনম হাশমি, ড. সুনীলম প্রমুখ।
রাজ্যসভার সাংসদ মনোজ ঝা এ বিষয়ে প্রকাশ্যে সমর্থন জানান, তবে কংগ্রেস ও বিজেপির অন্য কোনো সাংসদ এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।
IPSF এর একজন সদস্য বলেন, তাঁরা এখনো কোনো সংসদ সদস্যের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাননি। তবু তাঁরা চিঠিটি সরাসরি এমপিদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
চিঠির শেষভাগে লেখা আছে:
“ইতিহাস যেন না বলে যে ভারত, এক সময়ের নৈতিক নেতৃত্বদানকারী দেশ, নীরব রইল যখন সবচেয়ে জরুরি সময়ে তার অবস্থান প্রয়োজন ছিল।”