সুদানের উত্তর দারফুরে সেনাবাহিনী ও প্যারামিলিটারি বাহিনীর সংঘর্ষ চলমান। জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জানায়, এই সহিংসতা, অপুষ্টি ও কলেরা সংক্রমণে সেখানে অন্তত ৬৪০ হাজার শিশুর জীবন মারাত্মক ঝুঁকিতে।
সুদানে চলমান গৃহযুদ্ধে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিশুরা। উত্তর দারফুর রাজ্যের 'তাওইলা' অঞ্চলে গত ২১ জুন প্রথম কলেরা সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর মাত্র এক মাসের মধ্যে ১,১৮০ জন আক্রান্ত হন, যাদের মধ্যে প্রায় ৩০০ জনই শিশু। মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ২০ ছাড়িয়েছে।
তাওইলা অঞ্চলে প্রায় ৫ লাখ মানুষ সংঘর্ষ থেকে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে। ইউনিসেফ জানায়, এখানে খাদ্য, পানি ও চিকিৎসা সুবিধার চরম ঘাটতির কারণে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে।
ডারফুরের পাঁচ রাজ্য মিলিয়ে কলেরা আক্রান্তের সংখ্যা ২,১৪০ ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ৮০ জনের। ইউনিসেফ প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, “কলেরা প্রতিরোধযোগ্য ও সহজে চিকিৎসাযোগ্য হলেও, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে এর মোকাবিলা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ছে।”
তিনি আরও জানান, সংঘর্ষ, উদ্বাস্তু সমস্যা এবং দুর্বল স্বাস্থ্যব্যবস্থা এই মহামারিকে মারাত্মক রূপ দিয়েছে। ইউনিসেফ ইতোমধ্যে ১৪ লাখের বেশি কলেরা টিকা বিতরণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্যে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত সুদানে কলেরায় আক্রান্তের সংখ্যা ৯১,০৩৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২,৩০২ জনের।
এই সংকট এমন এক সময় ঘটছে, যখন ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধে সুদানে ২০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং জাতিসংঘের হিসাবে ১ কোটি ৫০ লাখের বেশি মানুষ গৃহহীন বা শরণার্থী হয়ে পড়েছেন। তবে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণা অনুযায়ী প্রকৃত মৃতের সংখ্যা ১,৩০,০০০ ছাড়িয়েছে।