ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক ফিলিস্তিনি বন্দিদের ওপর পদ্ধতিগত নির্যাতন, ধর্ষণ ও চিকিৎসা অবহেলার অভিযোগ জাতিসংঘে উত্থাপন করেছে একটি ব্রিটিশ সংস্থা। গাজা থেকে আটক অধিকাংশ ফিলিস্তিনি এখন গোপন সামরিক শিবিরে, যাদের সঙ্গে কোনো আইনজীবী বা মানবিক সংস্থা যোগাযোগ করতে পারছে না।
ব্রিটেনভিত্তিক সংস্থা 'প্যালেস্টাইন রিটার্ন সেন্টার' (PRC), যার জাতিসংঘের ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কাউন্সিলের পরামর্শমূলক মর্যাদা রয়েছে, তারা সম্প্রতি জাতিসংঘে এক প্রামাণ্য রিপোর্ট জমা দিয়েছে। এতে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে ফিলিস্তিনি বন্দিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর দ্বারা চালানো নির্যাতনের ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে।
রিপোর্টে জানানো হয়, আইনজীবী খালেদ মাহাজনেহর সংগ্রহ করা তথ্য অনুযায়ী বন্দিদের ওপর চালানো নির্যাতনের ধরনগুলোর মধ্যে রয়েছে—নিরবচ্ছিন্ন মারধর, ইচ্ছাকৃত ক্ষুধার্ত রাখা, অমানবিক ভঙ্গিতে দীর্ঘক্ষণ ঝুলিয়ে রাখা, চিকিৎসার অবহেলায় মৃত্যু, কুকুর দিয়ে আক্রমণ এবং অচেতন না করে অঙ্গচ্ছেদ। এমনকি একজন বন্দিকে ইসরায়েলি কারারক্ষীর দ্বারা ধর্ষণের ঘটনাও উল্লেখ করা হয়েছে।
বন্দিদের বেশিরভাগই গাজার বাসিন্দা এবং বর্তমানে ‘আনাতোট’ ও ‘সদে তেইমান’ নামক গোপন সামরিক শিবিরে আটক রাখা হয়েছে, যেখানে কোনো আইনজীবী বা রেড ক্রস কর্মী প্রবেশ করতে পারছেন না। এদের "বেআইনি যোদ্ধা" বা "সন্ত্রাসী" আখ্যা দিয়ে আন্তর্জাতিক মানবিক সুরক্ষা আইন পাশ কাটানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে PRC।
প্রতিবেদনটি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের চলমান তদন্তে অন্তর্ভুক্ত করার এবং একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের আহ্বান জানায়। তারা সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা বা কেবল প্রতীকী প্রতিবাদ এই মানবাধিকার লঙ্ঘনে পরোক্ষ সহায়তা হিসেবে গণ্য হবে।
মন্তব্য করুন