বাংলাদেশের মানবিক সংগঠন হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি সরাসরি গাজার চারটি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সহায়তা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। যুদ্ধের ভয়াবহতা উপেক্ষা করে নিরপেক্ষ ও পেশাদার ব্যবস্থায় চালানো এই তৎপরতা আন্তর্জাতিক মহলেও নজর কাড়ছে।
বাংলাদেশ সরকারের নিবন্ধিত মানবিক সংগঠন হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি অব বাংলাদেশ বর্তমানে গাজার চারটি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। গাজা পরিস্থিতি যখন আন্তর্জাতিক সহায়তার জন্য প্রায় অচল, তখন এই সংগঠনের তৎপরতা এক নতুন দৃষ্টান্ত।
২০২৫ সালের ৩১ জুলাই, ফিলিস্তিন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটিকে সরকারি সিল-স্বাক্ষরসহ অনুমতিপত্র দেয়। এরপর থেকেই তারা এই চারটি হাসপাতালে কাজ করছে:
১. মুজাম্মাউশ শিফা আত-তিব্বি, পশ্চিম গাজা
২. রানতিসি শিশু হাসপাতাল, উত্তর গাজা
৩. আল-আকসা হাসপাতাল, মধ্য গাজা
৪. ইউরোপিয়ান গাজা হাসপাতাল, দক্ষিণ গাজা
এই হাসপাতালগুলোতে স্থানীয় ফিলিস্তিনি টিমের মাধ্যমে ওষুধ ও চিকিৎসা যন্ত্রপাতি বিতরণ, রোগী পর্যবেক্ষণ এবং খাদ্য-পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে।
সংস্থার মহাপরিচালক মুহাম্মদ রাজ জানান, সীমান্তপথে বাধা থাকলেও গাজার স্থানীয় বাজার থেকেই উচ্চপুষ্টিকর স্যুপ, সবজি ও বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করে বিতরণ করা হচ্ছে, যা যুদ্ধক্ষেত্রে শিশু ও পরিবারের জন্য জরুরি পুষ্টির উৎস।
স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা হাফেজ্জী সোসাইটির ইউনিফর্ম ও ব্যানারে কাজ করেন, এবং প্রতিটি কার্যক্রম তারিখ-সময়-স্থানের ভিডিও ও চিত্রসহ নথিবদ্ধ হয়।
আর্থিক স্বচ্ছতা ও বৈধতা রক্ষায়, সংস্থাটি বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইডলাইন অনুসরণ করে বৈধ চ্যানেলে অর্থ মিশর হয়ে গাজায় প্রেরণ করে। প্রয়োজনে আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মাধ্যমে অর্থ পৌঁছায় নির্ভরযোগ্য হাতে।
মহাপরিচালক আরও জানান, আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের (UN OCHA, Geneva Convention Article 59) আওতায় সংগঠনটি নিরপেক্ষ, অরাজনৈতিক ও বৈধভাবে কাজ করছে।
DVC Code নামের আন্তর্জাতিক অডিট সংস্থা প্রতিবছর তাদের আর্থিক ও কার্যক্রমগত প্রতিবেদন মূল্যায়ন করে, যা আন্তর্জাতিক কর্তৃপক্ষের জন্য সর্বদা উন্মুক্ত।
সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ইবরাহিম মিয়া বলেন—
"মানবতার পাশে দাঁড়ানো কখনো অপরাধ নয়। গাজার কান্না থামাতে আমরা যতটুকু পেরেছি, দিয়েছি। ইতিহাস বলবে, আমরা পাশে ছিলাম।"
মন্তব্য করুন